মোঃ আতিকুর রহমান
ঝালকাঠি শহরতলীর কির্ত্তীপাশা মোড় থেকে একটু সামনে এগুলেই রাস্তার মধ্যে খানাখন্দক। তাতে ইটের টুকরা দিয়ে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। পাতলা করে গলানো বিটুমিন দিয়ে পাথরের গুড়ির সাথে পিচ মিশ্রিত মিক্চার দেয়া হচ্ছে। আষাঢ় মাস। ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টি আর ক্ষণে ক্ষণে রোদ। এরই মধ্যে চলছে এ সংস্কার কাজ। নতুন পিচ ঢালাইয়ের প্রধান শত্রু পানি। সেই পানির সাথে মিতালী করেই করা হচ্ছে সংস্কার কাজ। পাশাপাশি বোরো মৌসূমের ধান কৃষকের ঘরে উঠানোর পরে রাস্তার পাশেই তার খড় শুকাতে দিয়েছে গ্রামবাসী। রাস্তায় গাড়ি চলাচলের ফলে চাকায় খড় পিষ্ট হয়ে মিশে গেছে। শ্রমিকরা ঝাড়ু দিয়ে সেই খড় তুলে তার উপরে কার্পেটিং করছেন।
বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কির্ত্তিপাশা মোড় থেকে দক্ষিণাঞ্চলের পেয়ারা রাজ্য ভীমরুলীতে যাতায়াতের পথ এটি। এছাড়াও স্বরূপকাঠি যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত সহজতম পথ এটি। বর্ষা মৌসূমে এ রাস্তা সংস্কার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তারা জানান, আষাঢ় মাস, আকাশে মেঘ, কিছুক্ষণ পরপর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আবার ভারী বৃষ্টিও পড়ছে। এরই মধ্যে রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কার্পেটিং কাজ করা হচ্ছে। এধরনের কাজ কখনোই মজবুত হয় না। একাজ শেষ করতে না করতেই আবার উঠে যাবে। তাহলে সরকারের এ কাজ করে লাভ কি?
সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাকির হোসেন জানান, আন্তর্জাতিকভাবে অর্থবছরের হিসেবে জুন মাসে বার্ষিক কাজের ক্লোজিং (সম্পন্ন) করা হয়। অর্থবছরের শেষ পর্যায়ের মে ও জুন মাসে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করানো হয়ে থাকে। ইংরেজিতে মে-জুন মাস হলেও বাংলা সনের তো জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস থাকে। আর এ তিন মাস বর্ষাকাল। এসময়ে রাস্তার কাজ করালে তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
জুন ক্লোজিং ঠিক রেখে এসব কাজ ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করালে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ আরো ফলপ্রসু হতো। প্রত্যেকটি কাজের মেয়াদও দীর্ঘস্থায়ী হতো বলে মন্তব্য করেন চেয়ারম্যান জাকির হোসেন।
কির্ত্তিপাশা সড়কের সংস্কার কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমিনুল ইসলামের পক্ষে কাজ তদারকীতে ছিলেন মোঃ সাইদুল ইসলাম। তিনি জানান, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে কাজের টেন্ডার আহ্বান করলে আমরা শিডিউল ড্রপ করলে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি আমরা পাই। আমাদের কার্যাদেশ কয়েকদিন আগে দেয়া হয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি।
বৃষ্টির মধ্যে কিভাবে কাজ করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন ভারী বৃষ্টি হয়, তখন আমরা কাজ বন্ধ রাখি। স্থানীয়রা রাস্তার উপরে ধানের খড় শুকাতে দিছে তাও রাস্তার সাথে লেগে গেছে তা উঠিয়ে শুকানোর পরে আমরা সংস্কারের কাজ করছি। এখানের মাত্র ৭০০ মিটার সংস্কার কাজ করা হবে।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জানান, কির্ত্তিপাশা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের পেয়ারারাজ্য ঝালকাঠির ভিমরুলীতে যাতায়াতের সহজতম পথ। এছাড়াও স্বরুপকাঠি যাতায়াতের জন্য সহজতম পথ এটি। জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার প্রকল্পের আওতায় এ কাজ করানো হচ্ছে। যেহেতু এ মৌসূমে ওই এলাকায় দেশি বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক ভ্রমণে আসেন। এছাড়াও সড়কপথে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে পেয়ারা কিনতে আসেন ব্যবসায়ীরা। তাই যাতায়াত নির্বিঘœ করতে ক্ষতিগ্রস্ত অল্প কিছু জায়গা (৭০০ মিটার) সংস্কার করানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।