মোঃ আতিকুর রহমান
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ২ কিলোমিটারের ধানসিঁড়ি নদী খননের মাটিতে সংযোগ খাল ও সেচ নালা চাঁপা পরায় চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। উত্তর বাগরীর গাজী বাড়ি থেকে সিকদার বাড়ির খাল পর্যন্ত শত বিঘা জমিতে এ সমস্যার কারণে এলাকার কৃষকদের চাষাবাদ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। সেচ সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি এসব জমিতে বর্ষার পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন এ সমস্যা বিরাজ করছে। এলাকাবাসি বাধ্য হয়ে এই দূষিত পানি রান্না ও থালা-বাসন ধোয়ার কাজে ব্যবহার করছে। এছাড়াও ধানসিঁড়ি নদীর দু’পাশের বনজ সম্পদ নিলাম না করেই আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার কৃষক বাহাদুর গাজী, মোজাম্মেল, ইসরাফিল খান, এসমাইল খান, আঃ মজিদ, আঃ রউফ, ইলিয়াস সিকদার, কালাম জানান, আমরা প্রতি বছরের মতো চলতি মওসুমে ইরি (বোরো) আবাদ করতে পারিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ধানসিঁড়ি নদী খননের ঠিকাদার খননের মাটি সরিয়ে না নেয়ায় সেচ সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। পাহাড়ের মত মাটি কেটে ফেলে রাখায় এই এলাকার ৬টি সংযোগ খাল ও ৩টি কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে মাটির নীচে চাঁপা পরেছে। দ্রুত এ মাটি সরিয়ে খাল ও কালভার্টের মুখ চালু করতে না পারলে সামনের আমন মৌসুমেও চাষাবাদ করা সম্ভব হবেনা বলে কৃষকদের অভিযোগ।
তাঁরা আরো অভিযোগ করেন, ধানসিঁড়ি নদী খননের পূর্বে দু’পারে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ ছিলো। যা বনবিভাগ ও স্থানীয়রা রোপণ করেছিলো। খাল খননের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোন গাছের নিলাম হয়নি। স্থানীয় বাহুবলে বলিয়ান কয়েকজনকে নিয়ে রাজাপুর বন কর্মকর্তা ওই গাছ আত্মসাতের চেষ্টা করছে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানির হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় কৃষকরা।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ফয়সাল জানান, আমি বিষয়টি জানার সাথে সাথে মাটি সরিয়ে সেচ নালা ও সংযোগ খালগুলোর পানি চলাচল করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছি। তবে খননের মাটিগুলো কিছু অংশ সরিয়ে ওয়াক আউট করা হবে। একই সাথে পাশে গাছ লাগানো হবে। কিন্তু এ কাজের জন্য প্রথম টেন্ডারে আলাদা বরাদ্দ না থাকায় ঠিকাদার বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছে। যা বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে এ কাজ শুরু করা হবে।
রাজাপুর উপজেলা বনকর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, ধানসিঁড়ি নদী খননের সুবিধার্থে কিছু গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। যা পাশে রাখা মাটির নীচে চাঁপা পড়েছে। স্থানীয়দের সাথে যোগসাজসে গাছ আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।